কে এই কাসেম বিন আবু বাকার? (ভিডিওসহ)

প্রথম প্রকাশঃ এপ্রিল ৩০, ২০১৭ সময়ঃ ৭:৩০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ

কাসেম বিন আবু বাকার

কাসেম বিন আবু বাকার; বিদেশী সংবাদ সংস্থা ফলাও করে তাকে নিয়ে প্রতিবেদনের আগে শরহবাসীদের অনেকের জানাই ছিল না তিনি কে, কী তাঁর কাজ? অন্যদিকে গ্রামীণ সমাজের সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর লেখা বইয়ের চাহিদা বিপুল।  তাই তাঁর একটি উপন্যাস ‘ফুটন্ত গোলাপ’ এর সর্বোচ্চ তিরিশবারের চেয়েও বেশি  সংস্করণ বের হয়। এতদিন তাঁর কোনো খবর রাখার প্রয়োজন বোধ করেনি শহরবাসী লেখক, প্রকাশক কিংবা মিডিয়ার সাংবাদিকরা।  বিদেশী পত্রপত্রিকা তাঁকে বেস্ট সেলার বলার পর আমাদের  বুদ্ধিজীবী লেখক, প্রকাশক, মিডিয়াম্যানদের আঁতে ঘা লেগে যায়।তাদের প্রশ্ন, কেন বিদেশী মিডিয়া তাদের নিয়ে নিউজ না করে কোথাকার কোন অচেনা-অজানা ঔপন্যাসিকের নিউজ করতে গেল? তিনি কি তাদের প্রতিনিধি হবার যোগ্য? তাঁর লেখাতে কি সেই ধাঁর আছে; যা শহরবাসীরা লিখে থাকে? এই শহরবাসীদের মতে,  কাসেম বিন আবু বাকার একজন সাম্প্রদায়িক লোক। অবশ্য শহরবাসীরা তাঁকে লেখক বলতেও রাজি নন। তারা বলছেন, তিনি চটি বই লেখেন। ধর্মান্ধ এই লোককে ফলাও করার নিশ্চয় কোনো অভিসন্ধি আছে বিদেশীদের। কী সেই উদ্দেশ্য তা জানতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন  মিডিয়ার  সামনে হাজির করা হয়েছে তাঁকে। তবে সর্বশেষ রোববার বিকেলে একটি বেসরকারী মিডিয়া বেশ সময় ধরে তাঁকে কথা বলার সুযোগ দেয় লাইভে এনে। সেখানেই বেরিয়ে আসে অনেক অজানা তথ্য।

পড়ুন এবং দেখুন সেই সাক্ষাৎকারটি। সিদ্ধান্ত আপনার হাতে তাকে কোন নামে ডাকবেন এরপর থেকে। নিচে বিস্তারিত দেওয়া হল: 

 দেবদাস উপন্যাস পড়ে তিন দিন না খেয়ে কান্নাকাটি করেছেন তিনি। পরে তাঁর মা অনেক কষ্টে ছেলেকে বোঝাতে সমর্থ হন।

কাসেম জানান, যখন তিনি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন তখন দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন রহিমা। তখনই রহিমার প্রেমে পড়েন কাসেম। রহিমা ছিল কাসেমের বন্ধুর বোন। তবে রহিমা যখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো তখন তার বিয়ে ঠিক হয়। তবে রহিমার বিয়ের আগেই কাসেমের বাবা-মা কাসেমকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্তে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তবে তার সঙ্গে যার বিয়ে হয় তিনি ছিলেন অপূর্ব সুন্দরী।

বিয়ের ত্রিশ বছর পর রহিমার সঙ্গে দেখা হয় কাসেমের। সাক্ষাতে কখনো তার সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। কুশল বিনিময়ও হয়নি। কারণ তাকে দেখলে নিজের মধ্যে কষ্ট কাজ করে কাসেমের। যার সঙ্গে গভীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল প্রবীণ ঔপন্যাসিক কাসেম বিন আবুবাকারের তার সঙ্গে বিয়ে হয়নি। তবে এখনও সাবেক প্রেমিকা রহিমার খোঁজ রাখেন তিনি। এখনও বেঁচে আছেন কাসেমের প্রেমিকা রহিমা। রহিমাকে নিয়ে ‘বিলম্বিত বাসর’ উপন্যাসও লেখেন তিনি।

যদিও  প্রথম দিকে প্রকাশকরা তাঁর বই প্রকাশ করতে চাইতো না। ১৯৭৮ সালে তাঁর প্রথম বই ‘ফুটন্ত গোলাপ’ প্রকাশিত হয়। তিনি বলেন, ‘আমার বইয়ে খারাপটি লিখেছি, আবার খারাপের মলমও দিয়েছি। আমি অশালীন কিছু লিখি না’।

ভক্তদের সম্পর্কে কাসেম জানান, অনেক নারী ভক্ত রক্ত দিয়ে চিঠি লিখেছিল। এখনও অনেক পাঠক মোবাইলে যোগাযোগ করেন।

তিনি আরও জানান, সিলেটের এক নারী পাঠক তাঁকে ভালোবেসে তাঁর বাসায় চলে আসেন। এতে কাসেমের পরিবারের লোকজন অনেক রাগারাগি করেন। তখন কাসেমের ঘরে স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে ছিল। অনেক বোঝানোর পরও তিনি ঐ মেয়েকে বোঝাতে পারেননি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশী প্রবীণ ঔপন্যাসিক কাসেম বিন আবু বাকার। তাঁর উপন্যাসগুলো হাজার হাজার কপি বিক্রি হয়ে থাকে।বিদেশী সংবাদ মাধ্যমে তাঁকে প্রচারের পর থেকে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকেও তাকে নিয়ে জোরালো বিতর্ক শুরু হয়েছে। যদিও এক পক্ষের দাবি, কাসেম বিন আবুবাকার বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক। তবে বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যমে বরাবরই আলোচনার বাইরে ছিলেন কাসেম বিন আবু বাকার। ঔপন্যাসিক হিসেবেও সাহিত্য সমাজে ‘স্বীকৃতি ও সমাদর’ পাননি তিনি।

কিন্তু আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি কাসেম বিন আবুবাকারকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়। হয় আলোচনা-সমালোচনা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হন তিনি। যুক্তরাজ্যের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইয়াহু নিউজ, মধ্যপ্রাচ্যের আরব নিউজ, মালয়েশিয়ার দ্যা স্টার ও মালয়মেইল, পাকিস্তানের দ্য ডন, ফ্রান্সের ফ্রান্স টুয়েন্টি ফোর ও রেডিও ফ্রান্স ইন্টারন্যাশনাল, হাঙ্গেরির হাঙ্গেরি টুডেসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ফলাও করে কাসেমকে নিয়ে ঐ প্রতিবেদন ছেপেছে। 

 

প্রতিক্ষণ/এডি/সাই

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G